নিয়মিত কাঠবাদাম খাওয়ার উপকারিতা
কাঠবাদাম আমরা কে না চিনি আর কার না ভালো লাগে খেতে কাঠবাদাম। অনেক সুস্বাদু এই
খাবারটি খেতে যেমন অনেক ভালো লাগে তেমনি এর অনেক উপকারী দিক ও রয়েছে।
নিমিত কাঠ বাদাম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে আপনি সঠিক পোস্ট এর ভিতর এসেছেন । নিচের পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়লে আশা করি কাঠ বাদাম সম্পর্কে সকল তথ্য আপনি পেয়ে যাবেন।
সূচি পত্রঃ নিয়মিত কাঠবাদাম খাওয়ার উপকারিতা
- নিয়মিত কাঠবাদাম খাওয়ার উপকারিতা
- কাঠবাদাম এ প্রচুর এনটি-অক্সিডেন্ট পাওয়া যায়
- কাঠবাদাম মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে
- কাঠবাদাম ওজন নিয়ন্ত্রণ করে
- কাঠবাদাম হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়
- কাঠবাদাম হাড়ের সুস্থতা বজায় রাখে
- কাঠবাদাম রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ করে
- কাঠবাদাম ত্বক সুন্দর রাখে
- কাঠবাদাম চুল ভালো রাখে
- কাঠবাদাম হজম ক্ষমতা উন্নত করে
- কাঠবাদাম কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে
- শেষ কথা
নিয়মিত কাঠবাদাম খাওয়ার উপকারিতা
কাঠবাদামের প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, পটাশিয়াম, জিংক, ম্যাগনেসিয়াম,এবং ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। পুষ্টিগুনে ভরপুর এই বাদাম কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে, হৃদ রোগের ঝুঁকি কমায়,ওজন নিয়ন্ত্রণ করে,হজম ক্ষমতা উন্নত করে এমন কি চুল ও ত্বকের যত্নেও দারুন কাজ করে।
আরও পড়ুন ঃ দারুচিনি খেলে শরীরে কি কি উপকার হয়
প্রতিদিন এক মুঠো করে কাঠবাদাম খেলে আপনিও পেতে পারেন এমন অনেক উপকারিতা। এই প্রাকৃতিক উপাদানটি দেহে প্রবেশ করা মাত্রই নানা রকম শারীরিক সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। কাঠবাদাম বা আমন্ড হল পৃথিবীর প্রাচীনতম পুষ্টিকর খাবার গুলির মধ্যে অন্যতম কাঠবাদামে অনেক উপকারিতা আছে য।
কাঠবাদাম এ প্রচুর এনটি-অক্সিডেন্ট পাওয়া যায়
কাঠ বাদামে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের দেহকোষ কে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। আমাদের দেহে ঘটতে থাকা বিভিন্ন শারীরিক প্রক্রিয়া এবং পরিবেশগত কারণে দেহে প্রচুর পরিমাণে ফ্রীরেডিক্যালস তৈরি হয়।
যার ফলে অক্সিডেটিভ ট্রেসগুলো দেখা দেয়।এই oxidative স্ট্রেসর ফলে প্রদাহ বার্ধক্য এবং ক্যান্সারের মত মারান রোগ হতে পারে। এছাড়াও কাঠ বাদামে প্রচুর পরিমাণে ফাইট্রিক এসিড পাওয়া যায় যা আমাদের দেহের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ খনিজ উপাদান কে আবদ্ধ করে এবং শ্মশানে বাধা তৈরি করে থাকে।
কাঠবাদাম মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে
কাঠবাদামে উপস্থিত থাকে বিভিন্ন পুষ্টিকর উপাদান যা মস্তিষ্কের কর্ম ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। মস্তিষ্কের জন্য প্রয়োজনীয় দুটি পুষ্টি উপাদান হল রিভোফ্লাভিন ও এল কারনি টাইন। এই দুটি উপাদান মস্তিষ্কের কর্ম ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
আরও পড়ুন ঃ টক দই খাওয়ার উপকারিতা ও নিয়ম
এছাড়াও বাড়ন্ত শিশুদের বুদ্ধি বিকাশের জন্য কাঠবাদাম একটি গুরুত্বপূর্ণ খাবার। তাই প্রতিদিন ৪ থেকে ৫ টি কাঠবাদাম ভিজিয়ে খেলে মস্তিষ্কের কর্ম ক্ষমতা উন্নত হয় এবং আমাদের দেহের জন্য প্রয়োজনীয় উপকারী ফ্যাটের উৎস হিসেবে কাঠবাদাম বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
কাঠবাদাম ওজন নিয়ন্ত্রণ করে
কাঠবাদাম এ প্রোটিন ও ফাইবার পাওয়া যায় যা আমাদের মেয়েটাবলিজমকে বুস্ট করতে সাহায্য করে। ফলে আমাদের দেহের বিপাক প্রক্রিয়া উন্নত হয় এবং খাবার খুব সহজেই হজম হয়। পানিতে ভিজা নন কাঠবাদাম নিয়মিত খেলে ওজন খুব তাড়াতাড়ি কমে যায়।
কারণ এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে ফলে একটি কাঠবাদাম খেলেই অনেকক্ষণ পেট ভরা থাকে ও অতিরিক্ত খাওয়ার ইচ্ছে কমে যায়। এই কারণেই অতিরিক্ত ক্যালরি জমে ওজন বাড়ার সম্ভাবনা কমে যায়।
কাঠবাদাম হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়
কাঠবাদামে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পাওয়া যায় এটি রক্ত লিপিটের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রেখে আমাদের দেহের রক্ত প্রবাহকে স্বাভাবিক রাখে। কলেরা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন কাঠবাদামে থাকা ফ্লাইবানােয়েট নামক আন্টিঅক্সিডেন্টাল যৌগটির প্রবাহে এরকম হয়ে থাকে। এছাড়াও কাঠবাদামে আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট পাওয়া যায় যা খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। এর পাশাপাশি ম্যাগনেসিয়াম উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে থাকে।
কাঠবাদাম হাড়ের সুস্থতা বজায় রাখে
কাঠবাদামে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ,কপার, ভিটামিন, প্রোটিন,জিংক পাওয়া যায় যা হারে সুস্থতা বজায় রাখতে দারুণভাবে সাহায্য করে। তাই কাঠবাদাম কে হাড় গঠনের সুষম খাদ্য বলা হয়। এছাড়াও কাঠবাদামে থাকে ফসফরাস যা দেহ কাঠামোকে মজবুত ও সুগঠিত রাখে যার ফলে অস্টিও পরিসিসের মতো রোগের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়।
কাঠবাদাম রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ করে
কাঠবাদামে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট ফাইবার ও গুরুত্বপূর্ণ খনিজ উপাদান থাকে এর ফলে এটি রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে সক্ষম। কাঠবাদামে ম্যাগনেসিয়াম নামক একটি খনিজ উপাদান পাওয়া যায় যা একাধিক শারীরিক প্রক্রিয়া অংশগ্রহণ করে। এছাড়াও রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণ করে।
আরও পড়ুন ঃ খেজুর খাওয়ার উপকারিতা ও নিয়ম
টাইপ টু ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মানুষ গুলোর মধ্যে ম্যাগনেসিয়ামের অভাব দেখা যায়। তাই নিয়মিত কাঠবাদাম সেবন করলে রক্তে শর্করার মাত্রা উল্লেখযোগ্য ভাবে কমে যায় এবং ইনসুলিনের কার্যকারিতা উন্নত হয়। তবে যারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত নন তারাও ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়াতে নিয়মিত কাঠবাদাম খেতে পারেন।
কাঠবাদাম ত্বক সুন্দর রাখে
কাঠবাদামে উপস্থিত থাকে ফ্লাবানয়েড যা ত্বকের প্রয়োজনীয় পুষ্টি যোগাই এবং বার্ধক্য জনিত বলিরেখা দূর করতে সাহায্য করে। এছাড়াও এই বাদামে রয়েছে কারী ফ্যাটি অ্যাসিড যা ব্রণ ব্ল্যাক হেডস কে প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। এই ফ্যাটি এসিড গুলি ত্বকের ছিদ্রে আটকে থাকা তেল বা সিবাম কে নিয়ন্ত্রণ করে যার ফলে ব্রণ বা একনির সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যায়।
কাঠবাদাম চুল ভালো রাখে
আমাদের দেহে ম্যাগনেসিয়ামের অভাব দেখা দিলে চুল পড়ার মতো সমস্যা দেখা দেয়। এর জন্য নিয়মিত কাঠবাদাম খাওয়ার পাশাপাশি আমন্ড অয়েল ব্যবহার করলে চুল পড়া কমে যায়, নতুন চুল গজায়, এবং চুল ঘন করতে সাহায্য করে। কাঠবাদাম চুলকে প্রয়োজনে পুষ্টির যোগান দিয়ে চুল ভালো রাখতে সাহায্য করে থাকে।
কাঠবাদাম হজম ক্ষমতা উন্নত করে
কাঠবাদাম ভিজিয়ে খেলে হজম ক্ষমতা উন্নত হয়,কাঠবাদামের যে খোসা থাকে তা তৈরি হয় এক ধরনের উৎসেচক দিয়ে তাই যখন কাঠবাদাম ভেজানো হয়। তখন কাঠ বাদামের খোসা নরম হয়ে যায় একইসঙ্গে বাদামের মূল অংশটি বেশ নরম হয়।
এমন বাদাম খেলে খাবার খুব সহজেই হজম হয়ে যায়। আসলে ভেজানো কাঠবাদামের লাইপেস নামক উৎসেচক পাওয়া যায় যা খাবারে থাকা ফ্ল্যাট ও অন্যান্য জটিল উপাদান সহজে হজম করতে সাহায্য করে।
কাঠবাদাম কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে
এই সমস্যা দূর করতে আমাদের ফাইবার যুক্ত খাবার অবশ্যই খাওয়া উচিত। কাঠবাদামের প্রচুর পরিমাণে ফাইবার পাওয়া যায় আপনি যদি নিয়মিত ভেজানো কাঠবাদাম খেতে পারেন তাহলে কষ্ট কাঠিন্যের মতো সমস্যা থেকে খুব সহজেই মুক্তি পাবেন।
এছাড়া কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা দূর করার জন্য সঠিক পরিমাণে পানি পান করা দরকার এবং শারীরিক পরিশ্রম করা উচিতএছাড়াও কাঠবাদামের আরো অনেক উপকারিতা রয়েছে,যেমন-ক্যান্সার প্রতিরোধ করে, চোখের সুস্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রণ করে, ও স্মৃতিশক্তি প্রখর করে।
অতিরিক্ত পরিমাণে কাঠবাদাম খেলে যেই সমস্যাগুলো দেখা দিবে
স্বাস্থ্যের জন্য কাঠবাদাম উপকারী হলেও অতিরিক্ত পরিমাণে কাঠবাদাম খেলে বেশ কিছু অসুবিধা দেখা দিতে পারে।যেমন-
ওজন বৃদ্ধি হতে পারে, বমি বমি ভাব দেখা দিতে পারে, এবং কিডনিতে পাথর হতে পারে।
কাঠবাদাম খাওয়ার নিয়ম
বিশেষজ্ঞদের মতে কেউ যদি ওজন বাড়াতে চায় তাহলে সারাদিনে ১৫ থেকে ২০টি কাঠবাদাম খেতে পারেন। আর কেউ যদি ওজন কমাতে চান তাহলে সারাদিনে ৪ থেকে ৫টি কাঠবাদাম খাওয়া উচিত।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url