কুমড়োর বীজ খাওয়ার উপকার

পুষ্টিকরের দিক দিয়ে কুমড়োর বীজের কোন তুলনা নেই। কুমড়ো বীজ খেতে যেমন সুস্বাদু পুষ্টিগুণে ও অতুলনীয়। কুমড়ো ব্রীজ নানা প্রক্রিয়ায় খাওয়া যায়।

কুমড়োর-বীজ-খাওয়ার-উপকার

আপনি কি কুমড়ো বিজ খাওয়া নিয়ে ভাবছেন। কিন্তু ঠিক বুঝে উঠতে পারছেন না কিভাবে খাবেন কোন নিয়মে খাবেন এবং কতটুকু খাবেন। কুমড়োর বীজ খাওয়ার উপকার এবং কিভাবে খাবেন নিচের কনটেন্টটি পুরোপুরি পড়লে সবকিছু বুঝতে পারবেন আশা করি।

সূচি পত্রঃ কুমড়োর বীজ খাওয়ার উপকার 

কুমড়োর বীজ খাওয়ার উপকার

পরিচিত ও সকলের পছন্দের সবজি গুলোর মধ্যে একটি হল কুমড়ো। মিষ্টি স্বাদের এই সবজিটি সবাই খেতে পছন্দ করেন তবে  কুমড়ো খাওয়ার পর অনেকেই তার বীজ অবহেলা করে ফেলে দেয়। কিন্তু কুমড়ো ভিজে প্রচুর পুষ্টিগুণ রয়েছে এতে শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় বেশ কিছু উপাদান পাওয়া যায়।

যেমন-প্রোটিন, আয়রন, জিংক, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস এছাড়াও কুমড়ো বীজে ফাইটোকেমিক্যালস এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পাওয়া যায়। এসব উপাদান শরীর সুস্থ রাখতে সাহায্য করে এই বি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুবই উপকারী এবং যারা যৌন সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্য কুমড়ো বীজ ম্যাজিক এর মত কাজ করে। এছাড়াও নিয়মিত কুমড়ো বিষ খেলে প্রচুর উপকারিতা পাওয়া যায়। 

আরও পড়ুন ঃ তিসি  বীজের উপকারিতা ও  খাবার নিয়ম

কুমড়ো বীজের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা সঠিকভাবে অনেকেরই অজানা। ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিডের অন্যতম উৎস হলো কুমড়ো বীজ।তাই সারা বিশ্বের কুমড়া বীজের চাহিদা প্রতিদিন বেড়েই চলেছে। আপনি কুমড়ো বীজ বা পামকিন সিডস নিয়মিত খেলে প্রচুর উপকারিতা পাবেন।

কুমড়োর বীজ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে

বর্তমান সময় প্রচুর মানুষ টাইপ টু ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মানুষের খাদ্য তালিকায় এমন কিছু খাবার রাখা প্রয়োজন যা রক্তের শর্করার মাত্রা কম করতে সাহায্য করে।এই ক্ষেত্রে কুমড়ো বীর দারুন ভাবে সাহায্য করে কারণ এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার পাওয়া যায় যেটা একটু ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। 

এছাড়াও এতে ম্যাগনেসিয়াম পাওয়া যায় যা রক্তে শর্করার মাত্র কমাতে সাহায্য করে। ফলে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীরা কুমড়ো বীজ গ্রহণ করলে রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। ফলে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীরা আমরা বীজ গ্রহণ করলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকবে। অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কম করে ডায়াবেটিস সমস্যা প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে। 

কুমড়ো বীজ ওজন কমাতে সাহায্য করে

আমাদের দেহের অতিরিক্ত ওজনের জন্য নানা রকম সমস্যা দেখা দিতে পারেতাই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার।বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে কুমড়া বীজের পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার ও প্রোটিন পাওয়া যায় যা ওজন কমাতে দারুনভাবে সাহায্য করে। 

আরও পড়ুন ঃ  নিয়মিত কাঠবাদাম খাওয়ার উপকারিতা

এছাড়াও কুমড়ো বীজে রয়েছে আয়রন,ক্যালসিয়াম,বিটাক্যারোটিন    এবং এন্টিঅক্সিডেন্ট সহ একাধিক উপকারী উপাদান। এইসব উপাদান দ্রুত ওজন কমাতে সাহায্য করে এবং আপনার শরীর সুস্থ রাখতে একাধিক ভূমিকা রয়েছে এই কুমড়ো বিজে। তাই রোজ নিয়ম  করে কুমড়ো বীজ খেলে খুবই ভালো হয়। 

কুমড়ো বীজ উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে কুমড়ো বীজ বিশেষ ভূমিকা পালন করে কারণ এতে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণকারি উপাদান রয়েছে। কুমড়া বিদেশ থাকে আরজেনিন নামক অ্যামাইনো এসিড এবং নাইট্রিক অক্সাইড। 

কুমড়োর-বীজ-খাওয়ার-উপকার

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে নাইট্রিক অ্যাসিড স্নায়ু শীতল করে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। তাই হাই ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করতে আপনার খাদ্য তালিকায় কুমড়োবিজ অবশ্যই রাখা প্রয়োজন এবং এর পাশাপাশি চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। 

কুমড়ো বীজ পুরুষদের জন্য উপকারী

গবেষণায় দেখা গিয়েছে কুমড়ো বীজ শুক্রাণুর সংখ্যা বাড়াতে সক্ষম এবং এতে জিংক পাওয়া যায়। তাই কুমড়ো বিচ খেলে শুক্রাণুর গুণমান ভালো হয়। শুধু তাই নয় পুরুষদের প্রোস্টেট গ্রন্থে শক্তিশালী করতে

এবং স্বাস্থ্যকর হরমোনের প্রক্রিয়াকে উন্নত করতে কুমড়ো বীজ বেশ উপকারী। কুমড়ো বীজ পুরুষের যৌন স্বাস্থ্য বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং প্রজনন ক্ষমতা উন্নত করতে সাহায্য করে। 

কুমড়ো বীজ অনিদ্রা দূর করে

আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ঘুম অতি প্রয়োজনীয় একটি বিষয়। তবে বর্তমানে অনেকেই অনিদ্রার মত সমস্যায় আক্রান্ত। এক্ষেত্রে কুমড়ো বীজ দারুনভাবে সাহায্য করতে পারে কারণ এটি সেরোটনির নামক রাসায়নিক উপাদান তৈরি করতে সাহায্য করে যা স্নায়ু তন্ত্রের চাপ কমিয়ে অনিদ্রার সমস্যা কাটাতে সাহায্য করে। 

কুমড়োর বীজ হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়

কুমড়ো বীজে থাকে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড এই ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড ওজন কমাতে এবং হৃদ যন্ত্র ভালো রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও একটি খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায় ও রক্তের ট্রাই গ্লিসারাইড এর পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে। কুমড়ো বীজে ম্যাগনেসিয়াম পাওয়া যায় যা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে নিয়মিত কুমড়া বীজ খেলে হৃদ রোগের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়। 

কুমড়োর বীজ চুল ভালো রাখে

কুমড়ো বীজে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অসম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিড, তালফার, জিংক,ভিটামিন এ ইত্যাদি উপাদান যা চুল উজ্জ্বল ও ঘন করতে সাহায্য করে। এছাড়াও কুমড়ো বীজে রয়েছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড যা চুলের গঠন উন্নত করে চুলের ফলিকল মস্টিং করার পাশাপাশি চুল মজবুত করতে সাহায্য করে এবং বি এস টি উৎপাদন কমিয়ে চুল পড়ার প্রবণতা কমায়। তাই চুল ভালো রাখতে চাইলে অবশ্যই কুমড়ো বীজ খাওয়া প্রয়োজন। 

কুমড়ো বীজ ত্বক ভালো রাখে

কুমড়ো বীজে ভিটামিন ই এবং ক্যারোটিনয়েড এর মত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পাওয়া যায় স্থিতির স্থাপকতা বজায় রাখতে কোলাজেনকে উদ্দীপিত করতে সাহায্য করে। এছাড়াও এতে

আরও পড়ুন ঃ সাদা তিলের উপকারিতা

আলফা হাইড্রোক্সাইড অ্যাসিড পাওয়া যায় যা ত্বকের মৃত কোষ দূর করে ত্বকের উজ্জ্বল্য বৃদ্ধি পড়তে সাহায্য করে। নিয়মিত কুমড়া বীজ খেলে একনির মত সমস্যার সহজেই  দূর হয়ে যায়।

কুমড়ো বীজ মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখে

কুমড়ো ভিজে থাকে টিপটোপফ্যান এবং টায়োড্যাসিন নামক এমাইনো এসিড যা সবচেয়ে উপকারী  ভূমিকা পালন করে। কারণ এগুলো হলো শেরোটনিন এবং ডোপামিনের পূর্বসোরী। সেরোটোনিন এবং ডোপামিন আমাদের উদ্বেগ এবং মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

আপনি যদি অ্যাংজাইটি ও স্ট্রেস  সহজেই ম্যানেজ করতে পারেন তাহলে মানসিক ভাবেই অবশ্যই জন মনে থাকবে 

কুমড়ো বীজ হাড় ভালো রাখে

কুমড়ো বীজে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং জিংক পাওয়া যায় যা হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে এবং অস্টিওপরিসিসের মত হাড়ের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। 

কুমড়োর-বীজ-খাওয়ার-উপকার

এছাড়াও কুমড়ো বীজে আরও অনেক উপকারিতা রয়েছে,যেমন- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত করে, মূত্রনালীর সংক্রমণ প্রতিরোধ করে, এবং হজম শক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে,

কুমড়ো বীজ কিভাবে খাওয়া প্রয়োজন এবং কোন পরিস্থিতিতে খাওয়া উচিত নয়

পুষ্টি বৃদ্ধের মতে কুমড়া বীজ খাওয়ার সবচেয়ে ভালো সময় হলো সকালের খাবার বা নাস্তার সাথে খাওয়া। আপনি চাইলেও বিকেলেও খেতে পারেন। এই বীজ রান্নায় ব্যবহার করা যেতে পারে এছাড়াও অল্প সেঁকে বা কাঁচা খেলেও আপনি উপকার পাবেন। কুমড়ো বীজে প্রচুর উপকারিতা পাওয়া যায়,

তাই বলে অতিরিক্ত পরিমাণে খাবেন না। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ প্রতিদিন ৩০ গ্রাম বা ২ টেবিল চামচ পরিমাণ মতো কুমড়ো বীর খেতে পারেন। তবে বিশেষ কিছু পরিস্থিতিতে কুমড়ো বীজ খাওয়া একদমই উচিত নয়, কুমড়ো বীজ খেলে যাদের অ্যালার্জি হয় তাদের এটি খাওয়া উচিত নয়।

আরও পড়ুন ঃ আপেল সিডার ভিনেগার এর উপকারিতা ও নিয়ম

 এছাড়াও প্রেগন্যান্ট মহিলা এবং স্তন্যদানকারী মহিলাদের এবং হাইপোটেনশন আক্রান্ত ব্যক্তিদের কুমড়ো বীজ খাওয়া উচিত নয়। এছাড়াও আপনি যদি কম ক্যালোরি যুক্ত ডায়েটে থাকেন তবে আপনার এটির ব্যবহার সীমিত পরিমাণে করা উচিত কারণ এতে ক্যালরির পরিমাণ বেশি।

শেষ কথা ঃ কুমড়োর বীজ খাওয়ার উপকার

উপরের পোস্টটি পুরোপুরি পড়লে আশা করি বুঝতে পেরেছেন কুমড়োর বীজ খাওয়ার উপকার সম্পর্কে। আরো জানানোর চেষ্টা করেছি কুমড়োর বীজ কিভাবে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে এবং আমাদের শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে। 

এছাড়াও কুমড়ার বীজ উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে, পুরুষদের জন্য অনেক উপকারী এই কুমড়ার বীজ। কুমড়োর বীজ অনিদ্রা দূর করে হৃদ রোগের ঝুঁকি কমায় চুল ভালো রাখ্‌ ত্বক ভালো রাখে,এবং মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখে। এছাড়াও জানানোর চেষ্টা করেছি কিভাবে খাওয়া প্রয়োজন 

এবং কোন পরিস্থিতিতে খাওয়া উচিত নয়। আমাদের পোস্টটি পড়ে আপনাদের ভালো লাগলে আমাদের লেখার সার্থকতা। প্রতিদিন আরো নতুন নতুন ইনফরমিটিভ কন্টেন্ট পেতে ভিজিট করুন আমাদের ওয়েবসাইট কিছুক্ষণ ডট কম এ। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url